কিচমিচ এর উপকারিতা ও গুনাগুন বিস্তারিত
কিসমিস ছোট হলেও এর মধ্যেই অনেক পুষ্টিগুণ লুকায়িত আছে। গরম খুব গরম থাকে বলে প্রায় লোকে এটি খায় না। তবে যদি ভেজানো কিসমিস খাওয়া যায় তাহলে আপনার জন্য উপকারে আসবে। কিচমিচে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম আছে। তাছাড়া কিসমিস বাইবেলের একটি ভালো উৎস। যার সাহায্যে অনেক রোগ একেবারে মূল থেকে মুছে ফেলা যায়। যদি আপনি প্রতিদিন রাতে দশটি দানাদার কিসমিস ভিজিয়ে রাখেন এবং সকালে উঠে খান তাহলে কি আপনার অনেক রোগ প্রতিরোধ করবে । তাছাড়া আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো হবে। আজকে আমরা কিভাবে কিচমিচ খাবেন এবং আমরা কিচমিচ এর উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানাব।
কিসমিচ খাওয়ার নিয়ম
চাইলে আপনি বিভিন্ন উপায়ে কিসমিস খেতে পারেন তবে কিচমিচ এর উপকারিতা পেতে হলে কিছু নিয়ম মানতে হবে। নিচে কিসমিচ খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত দেওয়া হলো:
- আঙ্গুর ফল কি শুকিয়ে কিসমিচ তৈরি করা হয়। এই কিসমিচ পায়েস, সেমাই, কোরমা, হালুয়াসহ বিভিন্ন খাবারের সাথে রান্না করে খাওয়া হয়।
- কিসমিচ কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় কিসমিচের গুনাগুন অনেক বেশি। কাঁচা অবস্থায় কিসমিচ খেলে অবশ্যই কিসমিচ ধুয়ে পরিষ্কার করে খেতে হবে।
- কিসমিচ রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে কিসমিচ সহ কিসমিচের পানি খান এতে করে আপনার শরীর চাঙ্গা অনেক পুষ্টিগুণ পাবে।
>আরও পড়ুন- স্থায়ীভাবে এলার্জি দূর করার উপায় জেনে নিন
কিচমিচ এর উপকারিতা
হজমি উন্নতি: কোষ্টকাঠিন্য দূর করার অন্যতম ঘরোয়া উপায় হল ভেজানো কিচমিচ খাওয়ার মাধ্যমে। তাছাড়া যদি আপনি নিয়মিত কিচমিচ খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার একদম খাদ্য হজম সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
দাঁত এবং হাড়ের বর্ধন: দাঁতা এবং হাড়কে শক্তিশালী করতে প্রচুর ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য কিসমিচ খেতে পারেন। 100 গ্রাম কিসমিসে ভিতরের প্রায় 50 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে । তাছাড়া বোরণ নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও কিচমিচে থাকে যা সঠিকভাবে হাড় কার্যকরী গঠন করতে সাহায্য করে এবং ক্যালসিয়ামকে তাড়াতাড়ি শুষে নিতে শরীরকে সাহায্য করে। যা আপনার দাঁত এবং হাড়কে শক্তিশালী করতে কাজ করি।
রিস্কলস দূরে থাকবে: কিসমিচ খাওয়ার ফলে আপনার জীবনকাল বাড়বে। তাছাড়া এটি আপনার ত্বকের কুঁচকে যাওয়া দূর করবে।
সর্বদা অল্পবয়সী থাকবেন: আপনি যদি সর্বদা সব সময় অল্প বয়সী থাকতে চান তাহলে এখনই কিস কিস জল পান করা শুরু করেন। রাতে কিসমিচ জলে সিদ্ধ করে এবং আপনি সকালে উঠে কিসমিসের জল পান করলে সর্বদা অল্প বয়সী থাকবেন।
রোগের বিরুদ্ধে লড়াই ক্ষমতা বাড়ায়: রাতে ভেজানো কিসমিচ খেয়ে এবং তার জল পান করলে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলোর কারণে অনাক্রম্যতা আরো ভালো হয় যার কারণে আমাদের দেহের বাহ্যিক ভাইরাস গুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হয় এবং এইসব ব্যাকটেরিয়াগুলো দেহে প্রবেশ করতে সক্ষম হয় না।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: কিচমিচে ক্যাটেচিন নামক এক ধরনের অ্যান্টিওক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরে ভিতর ভেসে বেড়ানো ফ্রি র্যাডিকল গুলিকে লড়ায় করে নিঃশেস করে দেয়। শরীরের এই ফ্রি র্যাডিকল গুলো ক্যান্সার সেলের স্বতঃস্ফূর্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং মেটাস্টাসিসেও সাহায্য করে এবং মেটাস্টাসিসেও সাহায্য করে। কিচমিচ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখলে শরীরে ক্যাটেচিন এর মতন শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে শরীরের মধ্যে থাকা উচ্চমাত্রার সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ার প্রধান কারণ। মিশরের মধ্যে থাকা সোডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ মাত্রায় রাখতে পারে। যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওজন বাড়াতে সাহায্য করে: অনেক মানুষ আছে ওজন কমাতে চাই। আবার অনেক মানুষ আছে স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা ওজন বাড়াতে চায়। আর আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান তাহলে কিচমিচ আপনাকে ওজন বাড়াতে অনেক বেশী সাহায্য করবে।
ঘুম ভালো হবে: সঠিকভাবে ঘুম না হলে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা পালন করে এই কিচমিচ। কিসমিচে যে আয়রন রয়েছে তা ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। কোন একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে না বরং বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে।
যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: কিসমিস নিয়িমিত খেলে যৌন দুর্বলতা দূর হবে এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। কিসমিচে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি আছে যা দেহের পুষ্টি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে । কিসমিচ খেলে মন ও শরীর ভালো হয় যৌন মিলন দীর্ঘ ও তৃপ্তিময় হয়। নিয়মিত কিসমিচ খেলে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে এবং যৌন সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন সকালে পাঁচ থেকে সাতটি কিসমিচ ভেজানো খান এটি চিরদিনের জন্য যৌন সমস্যা বিলুপ্ত ঘটবে।
আরও পড়ুর- ব্লাড ক্যান্সার লক্ষণ ও প্রতিরোধ করার উপায়
কিচমিচ এর অপকারিতা
- কিচমিচ খেলে এলার্জি সমস্যা বাড়তে পারে। তাই যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তারা কিচমিচ খাবেন না।
- যারা শরীরের ওজন কমাতে চান তারা অতিরিক্ত কিচমিচ খাবেন না। কারণ কিচমিচ শরীরের ওজন বাড়ায়।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণ কিচমিচ খাবেন না। এতে করে ডায়াবেটিস আর বেড়ে যেতে পারে।
- কিচমিচ খাবার হজমে বিঘ্ন ঘটায় তাই অতিরিক্ত কিচমিচ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
>আরও পড়ুন- চুলকানি বা এলার্জি ঔষধ এর নাম ও মলম এর নাম জেনে রাখুন –